ঢাকা ১০:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিয়োগপ্রত্যাশী শিক্ষকদের ফের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করল পুলিশ

ফের কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার এবং লাঠিপেটা করে প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে নিয়োগ বাতিলকৃত সহকারী শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। আজ রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাঁরা সচিবালয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় কয়েকজন নারীকে রাস্তায় পরে যেতে দেখা যায়। পরে তাঁরা ফুটপাতে আশ্রয় নেন।

এর আগে রোববার দুপুরে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মহাসমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। সেখান থেকে পদযাত্রা করে হাজারের বেশি নারী–পুরুষ হাইকোর্ট মাজারের সামনে যান। সেখানে সচিবালয়মুখী রাস্তায় তাঁরা পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।

সরেজমিন দেখা গেছে, পুলিশের বাধা পেয়ে আন্দোলনকারীরা শিক্ষাভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। তাঁরা পুলিশ ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। এতে ওই সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ প্রথমে জটলার মধ্যে জলকামান থেকে পানি ছোড়েন, তাঁদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের হাতে থাকা ব্যানার ছিনিয়ে নেয় পুলিশ। সড়ক থেকে ধাওয়া দেন, গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করা হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা যে যাঁর মতো দৌড়ে ওই এলাকা ত্যাগ করেন।

আসলাম নামের একজন আন্দোলনকারী বলেন, তাঁদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি ছিল। পুলিশ তাতে বাধা দিয়েছে। লাঠিপেটা ও পরে জলকামান ব্যবহার করেছে, নারীদের ওপর লাঠিপেটা করেছে।

এসব নারী-পুরুষ নিয়োগ ফেরত পাওয়ার জন্য গত ১১ দিন ধরে শাহবাগে আন্দোলন করছেন। কখনো সড়ক অবরোধ, কখনো সমাবেশ ছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের ওপর গত কয়েক দিনে কয়েক দফা চড়াও হয়েছে পুলিশ, তারপরও তারা জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন।

আন্দোলনকারী সানজিদা আক্তার রুমা বলেন, ‘মেধার মাধ্যমে চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়ে সড়কে নামতে হয়েছে।’

তাঁদের যৌক্তিক আন্দোলনে তিন দিন পুলিশ বলপ্রয়োগ করেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারও তাঁদের ওপর জলকামান থেকে পানি নিক্ষেপ করার পাশাপাশি পুলিশ লাঠিপেটা করেছে।

এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তাঁদের ওপর জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করেছিল। ওই দিন পুলিশ আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটাও করে।

এ বিষয়ে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, আন্দোলনকারীদের যাওয়ার কথা ছিল প্রেসক্লাবের দিকে, তবে তাঁরা পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ের দিকে যাচ্ছিল। তাই তাদের জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীরা জানান, তাঁরা দিনে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন, আর রাতে তাঁরা থাকেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। এভাবে তাঁরা ১১ দিন ধরে লাগাতার কর্মসূচি পালন করছেন।

তিন ধাপে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন। নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। পরে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাঁদের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে রায় দেন।

আলোচিত

স্বাধীনতা দিবসে কুচকাওয়াজ হচ্ছে না: স্বরাষ্ট্র সচিব

নিয়োগপ্রত্যাশী শিক্ষকদের ফের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করল পুলিশ

০৭:৪৫:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ফের কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার এবং লাঠিপেটা করে প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে নিয়োগ বাতিলকৃত সহকারী শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। আজ রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাঁরা সচিবালয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় কয়েকজন নারীকে রাস্তায় পরে যেতে দেখা যায়। পরে তাঁরা ফুটপাতে আশ্রয় নেন।

এর আগে রোববার দুপুরে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মহাসমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। সেখান থেকে পদযাত্রা করে হাজারের বেশি নারী–পুরুষ হাইকোর্ট মাজারের সামনে যান। সেখানে সচিবালয়মুখী রাস্তায় তাঁরা পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।

সরেজমিন দেখা গেছে, পুলিশের বাধা পেয়ে আন্দোলনকারীরা শিক্ষাভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। তাঁরা পুলিশ ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। এতে ওই সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ প্রথমে জটলার মধ্যে জলকামান থেকে পানি ছোড়েন, তাঁদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের হাতে থাকা ব্যানার ছিনিয়ে নেয় পুলিশ। সড়ক থেকে ধাওয়া দেন, গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করা হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা যে যাঁর মতো দৌড়ে ওই এলাকা ত্যাগ করেন।

আসলাম নামের একজন আন্দোলনকারী বলেন, তাঁদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি ছিল। পুলিশ তাতে বাধা দিয়েছে। লাঠিপেটা ও পরে জলকামান ব্যবহার করেছে, নারীদের ওপর লাঠিপেটা করেছে।

এসব নারী-পুরুষ নিয়োগ ফেরত পাওয়ার জন্য গত ১১ দিন ধরে শাহবাগে আন্দোলন করছেন। কখনো সড়ক অবরোধ, কখনো সমাবেশ ছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের ওপর গত কয়েক দিনে কয়েক দফা চড়াও হয়েছে পুলিশ, তারপরও তারা জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন।

আন্দোলনকারী সানজিদা আক্তার রুমা বলেন, ‘মেধার মাধ্যমে চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়ে সড়কে নামতে হয়েছে।’

তাঁদের যৌক্তিক আন্দোলনে তিন দিন পুলিশ বলপ্রয়োগ করেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারও তাঁদের ওপর জলকামান থেকে পানি নিক্ষেপ করার পাশাপাশি পুলিশ লাঠিপেটা করেছে।

এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তাঁদের ওপর জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করেছিল। ওই দিন পুলিশ আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটাও করে।

এ বিষয়ে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, আন্দোলনকারীদের যাওয়ার কথা ছিল প্রেসক্লাবের দিকে, তবে তাঁরা পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ের দিকে যাচ্ছিল। তাই তাদের জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীরা জানান, তাঁরা দিনে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন, আর রাতে তাঁরা থাকেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। এভাবে তাঁরা ১১ দিন ধরে লাগাতার কর্মসূচি পালন করছেন।

তিন ধাপে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন। নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। পরে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাঁদের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে রায় দেন।