ঢাকা ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এশিয়ার ১০টিসহ ৪৩ দেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারির পরিকল্পনা করছে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ৪৩টি দেশ পড়তে পারে, যা ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার তুলনায় আরও ব্যাপক হতে পারে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

১১টি দেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ
মার্কিন কূটনীতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা একটি ‘লাল তালিকা’ প্রস্তাব করেছেন, যেখানে থাকা ১১টি দেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশগুলো হলো—

✅ আফগানিস্তান
✅ ভুটান
✅ কিউবা
✅ ইরান
✅ লিবিয়া
✅ উত্তর কোরিয়া
✅ সোমালিয়া
✅ সুদান
✅ সিরিয়া
✅ ভেনেজুয়েলা
✅ ইয়েমেন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই তালিকা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তৈরি করেছিল এবং হোয়াইট হাউসে পাঠানোর আগেই এর পরিবর্তন আসতে পারে।

১০টি দেশ আংশিক নিষেধাজ্ঞার আওতায়
একটি ‘কমলা তালিকা’ প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে থাকা দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এই তালিকায় থাকা দেশের সাধারণ নাগরিকরা পর্যটন ও অভিবাসী ভিসা পাবেন না, তবে ধনী ব্যবসায়ীরা প্রবেশের অনুমতি পেতে পারেন।

✅ বেলারুশ
✅ ইরিত্রিয়া
✅ হাইতি
✅ লাওস
✅ মিয়ানমার
✅ পাকিস্তান
✅ রাশিয়া
✅ সিয়েরা লিওন
✅ দক্ষিণ সুদান
✅ তুর্কমিনিস্তান

৬০ দিনের মধ্যে তথ্যঘাটতি পূরণের নির্দেশ
এছাড়া, একটি ‘হলুদ তালিকা’ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে থাকা ২২টি দেশকে ৬০ দিনের মধ্যে নিরাপত্তা তথ্যঘাটতি পূরণ করতে বলা হয়েছে। ব্যর্থ হলে এসব দেশকে লাল বা কমলা তালিকায় স্থানান্তর করা হতে পারে।

এই তালিকায় রয়েছে—
✅ অ্যাঙ্গোলা, ✅ অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, ✅ বেনিন, ✅ বুরকিনা ফাসো, ✅ কম্বোডিয়া, ✅ ক্যামেরুন, ✅ কেপ ভার্দে, ✅ চাদ, ✅ কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ✅ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ✅ ডোমিনিকা, ✅ ইকুয়াটোরিয়াল গিনি, ✅ গাম্বিয়া, ✅ লাইবেরিয়া, ✅ মালি, ✅ মৌরিতানিয়া, ✅ সেন্ট কিটস ও নেভিস, ✅ সেন্ট লুসিয়া, ✅ সাও টোমে ও প্রিন্সিপে, ✅ ভানুয়াতু ও ✅ জিম্বাবুয়ে।

নিষেধাজ্ঞার ব্যাপ্তি ও অনিশ্চয়তা
২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে নির্দেশ দেয়, কোন কোন দেশের নাগরিকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হতে পারে, তা নির্ধারণ করতে। সেই অনুযায়ী, ৬০ দিনের মধ্যে হোয়াইট হাউসে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, যার সময়সীমা আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে।

এদিকে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলোর ইতোমধ্যে ভিসাপ্রাপ্ত নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। একইভাবে, গ্রিন কার্ডধারীরা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন কি না, তাও নিশ্চিত করা হয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, কিছু দেশের অন্তর্ভুক্তি বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। যেমন, ভুটানকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হলেও এটি একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। অন্যদিকে, রাশিয়া থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ভিন্ন ধরনের কূটনৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেও কয়েকটি মুসলিম দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছিল। এবার আরও বড় পরিসরে নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।

আলোচিত

 সৌদিতে ২৯ রমজানে চাঁদ দেখা গেলে ৩০ মার্চ ঈদ

এশিয়ার ১০টিসহ ৪৩ দেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা

০৮:৫০:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারির পরিকল্পনা করছে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ৪৩টি দেশ পড়তে পারে, যা ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার তুলনায় আরও ব্যাপক হতে পারে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

১১টি দেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ
মার্কিন কূটনীতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা একটি ‘লাল তালিকা’ প্রস্তাব করেছেন, যেখানে থাকা ১১টি দেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশগুলো হলো—

✅ আফগানিস্তান
✅ ভুটান
✅ কিউবা
✅ ইরান
✅ লিবিয়া
✅ উত্তর কোরিয়া
✅ সোমালিয়া
✅ সুদান
✅ সিরিয়া
✅ ভেনেজুয়েলা
✅ ইয়েমেন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই তালিকা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তৈরি করেছিল এবং হোয়াইট হাউসে পাঠানোর আগেই এর পরিবর্তন আসতে পারে।

১০টি দেশ আংশিক নিষেধাজ্ঞার আওতায়
একটি ‘কমলা তালিকা’ প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে থাকা দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এই তালিকায় থাকা দেশের সাধারণ নাগরিকরা পর্যটন ও অভিবাসী ভিসা পাবেন না, তবে ধনী ব্যবসায়ীরা প্রবেশের অনুমতি পেতে পারেন।

✅ বেলারুশ
✅ ইরিত্রিয়া
✅ হাইতি
✅ লাওস
✅ মিয়ানমার
✅ পাকিস্তান
✅ রাশিয়া
✅ সিয়েরা লিওন
✅ দক্ষিণ সুদান
✅ তুর্কমিনিস্তান

৬০ দিনের মধ্যে তথ্যঘাটতি পূরণের নির্দেশ
এছাড়া, একটি ‘হলুদ তালিকা’ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে থাকা ২২টি দেশকে ৬০ দিনের মধ্যে নিরাপত্তা তথ্যঘাটতি পূরণ করতে বলা হয়েছে। ব্যর্থ হলে এসব দেশকে লাল বা কমলা তালিকায় স্থানান্তর করা হতে পারে।

এই তালিকায় রয়েছে—
✅ অ্যাঙ্গোলা, ✅ অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, ✅ বেনিন, ✅ বুরকিনা ফাসো, ✅ কম্বোডিয়া, ✅ ক্যামেরুন, ✅ কেপ ভার্দে, ✅ চাদ, ✅ কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ✅ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ✅ ডোমিনিকা, ✅ ইকুয়াটোরিয়াল গিনি, ✅ গাম্বিয়া, ✅ লাইবেরিয়া, ✅ মালি, ✅ মৌরিতানিয়া, ✅ সেন্ট কিটস ও নেভিস, ✅ সেন্ট লুসিয়া, ✅ সাও টোমে ও প্রিন্সিপে, ✅ ভানুয়াতু ও ✅ জিম্বাবুয়ে।

নিষেধাজ্ঞার ব্যাপ্তি ও অনিশ্চয়তা
২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে নির্দেশ দেয়, কোন কোন দেশের নাগরিকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হতে পারে, তা নির্ধারণ করতে। সেই অনুযায়ী, ৬০ দিনের মধ্যে হোয়াইট হাউসে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, যার সময়সীমা আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে।

এদিকে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলোর ইতোমধ্যে ভিসাপ্রাপ্ত নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। একইভাবে, গ্রিন কার্ডধারীরা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন কি না, তাও নিশ্চিত করা হয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, কিছু দেশের অন্তর্ভুক্তি বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। যেমন, ভুটানকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হলেও এটি একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। অন্যদিকে, রাশিয়া থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ভিন্ন ধরনের কূটনৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেও কয়েকটি মুসলিম দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছিল। এবার আরও বড় পরিসরে নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।