করের আওতায় আসছেন দেশের চিকিৎসক ও জেলা, উপজেলা ও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ব্যবসায়ী এবং আইনজীবীরা। আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দেশের জেলা উপজেলা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত আয় করেন কিন্তু কর দেন না। এসব ব্যবসায়ী ও চিকিৎসকদের করের আওতায় আনতে জেলা প্রশাসকেরা পরামর্শ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী কর আদায়ের বিষয়ে তাদেরকে (জেলা প্রশাসক) কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, পর্যাপ্ত আয় করার পরও যারা কর দেন না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে এ বিষয়ে অভিযান পরিচালনার অনুরোধ করা হয়েছে জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ভ্যাট-ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে রেখে কর গ্রহণের পরিধিটা বাড়ানোর বিষয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জোর করে কর আদায় না করে পরিধি বা আওতা বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে ৫০–৬০ লাখ, কিন্তু কর দেয় মাত্র পাঁচ লাখ।
চিকিৎসকদের করের আওতার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের সব চিকিৎসক এবং আইনজীবীরা যে ফি নেয় সেটাও রসিদ বা ডিজিটাল পেমেন্ট মেথডে এনে তাদেরকেও করের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক-আইনজীবীরা সরাসরি ক্যাশ ট্রানজেকশন করেন। এর কারণে কিন্তু তাদেরকে করের আওতায় আনা যায় না। চিকিৎসকেরা যে ফি নেন তাঁর রসিদ তো আপনারা নেন না। এই ফি যদি ডিজিটাল মাধ্যমে দেওয়া হয় তাহলে কিন্তু তার একটা রেকর্ড থাকে। বিদেশে কিন্তু এগুলো সব রেকর্ডেড।’
চিকিৎসকদের করের আওতায় আনতে কী উদ্যোগ নেওয়া হবে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের যেসব সহকারী বসে থাকে তারা টাকা নেয়, কিন্তু রিসিট দেয় না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের ইনসিস্ট করা যে আপনারা রিসিট দেন। আমি তো কোনো চিকিৎসককে দেখি না তারা রিসিট দেয়।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান বাড়ানো সহজ। চায়নাতে গ্রাম্য শিল্পের সঙ্গে গভীর যোগাযোগ। চায়নার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে তৈরি হওয়া পণ্য আমেরিকার ওয়ালমার্টেও পাবেন। অথচ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই জিনিসগুলো যোগাযোগের অভাবে উঠে আসে না। যোগাযোগ না থাকায় ব্যালেন্স উন্নয়নটা করা সম্ভব হবে না।’
এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত আমরা বাস্তবায়ন করি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়ে। মাঠ পর্যায়ের অফিসাররা যদি দক্ষ এবং সেবক হয় তাহলে জনগণ যে সেবাটা পান সেটা কার্যকর হয়।’