ঢাকা ০১:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল

তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা পাড়ের ১৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নিয়ে আসছে নদী পাড়ের মানুষেরা। ঢল নেমেছে তিস্তা ব্রিজের নিচে জনসভায় স্থলে। এই কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুর ১টার দিকে রংপুর জেলার তিস্তা রেলওয়ে সেতু-সংলগ্ন চর পয়েন্টে এমন চিত্র দেখা গেছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মুখে স্লোগান শোনা যায়, ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’, ‘তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চাই’।

তিস্তা রেলসেতু চর পয়েন্টে এলাকায় দেখা যায় অসংখ্য মাইক লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের সংগঠনের কর্মীরা তাঁবু বসিয়েছে। নারী পুরুষ, শিশু যুবক, বৃদ্ধ নানা বয়সের মানুষের সমাগম দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, নৌকা করে, বাস, নানা ধরনের যানবাহন নিয়ে মানুষ আসছে এই তিস্তা বাঁচাও কর্মসূচিতে যোগ দিতে। জনসাধারণ এসে মিছিল করছে।

সোমবার একসাথে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। টানা ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচি দুপুর ২টায় উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি তিস্তা রেলসেতু পয়েন্টে দুপুর ১টার দিকে এসেছেন।

সমাবেশে আসা তিস্তাপাড়ের জেলে এনামুল হক জানান, বাপ-দাদারা তিস্তা নদীতে সারাবছর মাছ ধরত। তিস্তা নদীর সুটকি সারাদেশে চলে যেত। এখন বর্ষার দু’-তিন মাস মাছ ধরতে পারলেও বাকি সময় পরিবারের খাবার যোগানো কষ্ট হয়ে পড়ে। পানি না থাকায় অনেক জেলে তাদের পেশার পরিবর্তন করেছেন। আগের মতো নেই তিস্তা নদীতে মাঝি মাল্লাদের ডাক হাক। তিনিও দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান।

সমাবেশে যোগ দিতে আসা রংপুরের কাউনিয়ার তিস্তাপারের বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা একটি প্রকল্প ছিল। বিগত সরকার গড়িমসি করে তা বাস্তবায়ন করেনি। বর্ষার সময় ভারত পানি দিয়ে আমাদের ডুবিয়ে দেয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ করতে পারি না। আমরা তিস্তার পানির সমান অধিকার চাই।

তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও নদীর প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে পূর্বঘোষিত দু’দিনের কর্মসূচিতে থেকে শুরু হয়েছে। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাও’ স্লোগান নিয়ে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বিএনপি ও তার মিত্ররা। রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার সর্বস্তরের জনগণ তিস্তা অভিমুখে পদযাত্রা এবং নদীর দুই তীরে ২৩০ কিলোমিটারজুড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।

আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিস্তা নদী বেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। এর মধ্যে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ও গঙ্গাচড়া মহিপুর বাজার-সংলগ্ন তিস্তা নদীর বুকে রংপুরের কর্মসূরি পালিত হবে। জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সংহতি জানাতে তিস্তাপাড়ে এসেছেন।

পদযাত্রার বিভিন্ন স্পটগুলোতে পৃথক পৃথকভাবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্নয়ক জোনায়েদ সাকি।

আলোচিত

গৌরীর জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমিরের

‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল

০২:১৬:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা পাড়ের ১৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নিয়ে আসছে নদী পাড়ের মানুষেরা। ঢল নেমেছে তিস্তা ব্রিজের নিচে জনসভায় স্থলে। এই কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুর ১টার দিকে রংপুর জেলার তিস্তা রেলওয়ে সেতু-সংলগ্ন চর পয়েন্টে এমন চিত্র দেখা গেছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মুখে স্লোগান শোনা যায়, ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’, ‘তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চাই’।

তিস্তা রেলসেতু চর পয়েন্টে এলাকায় দেখা যায় অসংখ্য মাইক লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের সংগঠনের কর্মীরা তাঁবু বসিয়েছে। নারী পুরুষ, শিশু যুবক, বৃদ্ধ নানা বয়সের মানুষের সমাগম দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, নৌকা করে, বাস, নানা ধরনের যানবাহন নিয়ে মানুষ আসছে এই তিস্তা বাঁচাও কর্মসূচিতে যোগ দিতে। জনসাধারণ এসে মিছিল করছে।

সোমবার একসাথে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। টানা ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচি দুপুর ২টায় উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি তিস্তা রেলসেতু পয়েন্টে দুপুর ১টার দিকে এসেছেন।

সমাবেশে আসা তিস্তাপাড়ের জেলে এনামুল হক জানান, বাপ-দাদারা তিস্তা নদীতে সারাবছর মাছ ধরত। তিস্তা নদীর সুটকি সারাদেশে চলে যেত। এখন বর্ষার দু’-তিন মাস মাছ ধরতে পারলেও বাকি সময় পরিবারের খাবার যোগানো কষ্ট হয়ে পড়ে। পানি না থাকায় অনেক জেলে তাদের পেশার পরিবর্তন করেছেন। আগের মতো নেই তিস্তা নদীতে মাঝি মাল্লাদের ডাক হাক। তিনিও দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান।

সমাবেশে যোগ দিতে আসা রংপুরের কাউনিয়ার তিস্তাপারের বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা একটি প্রকল্প ছিল। বিগত সরকার গড়িমসি করে তা বাস্তবায়ন করেনি। বর্ষার সময় ভারত পানি দিয়ে আমাদের ডুবিয়ে দেয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ করতে পারি না। আমরা তিস্তার পানির সমান অধিকার চাই।

তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও নদীর প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে পূর্বঘোষিত দু’দিনের কর্মসূচিতে থেকে শুরু হয়েছে। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাও’ স্লোগান নিয়ে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বিএনপি ও তার মিত্ররা। রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার সর্বস্তরের জনগণ তিস্তা অভিমুখে পদযাত্রা এবং নদীর দুই তীরে ২৩০ কিলোমিটারজুড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।

আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিস্তা নদী বেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। এর মধ্যে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ও গঙ্গাচড়া মহিপুর বাজার-সংলগ্ন তিস্তা নদীর বুকে রংপুরের কর্মসূরি পালিত হবে। জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সংহতি জানাতে তিস্তাপাড়ে এসেছেন।

পদযাত্রার বিভিন্ন স্পটগুলোতে পৃথক পৃথকভাবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্নয়ক জোনায়েদ সাকি।