ঢাকা ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সব জনতাই সমস্যা ক্রিয়েট করছে: ‘তৌহিদি জনতা’ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরে ৩০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

সব জনতাই সমস্যা তৈরি করছে, তবে সব জনতাকেই সরকার নিয়ন্ত্রণও করছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরে ৩০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা। এ সময় ‘তৌহিদি জনতার মব’ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

অমর একুশে বইমেলা–সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ‘তৌহিদি জনতা’ নামে ‘মব’ তৈরি করা হচ্ছে, এমনকি ফুলের দোকানেও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সব জনতাই বিভিন্ন সমস্যা ক্রিয়েট করতেছে। তবে আমরা সব জনতাকেই নিয়ন্ত্রণ করছি। সব জনতা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আমাদের। কোন ধরনের জনতা কিসের জন্য মব ক্রিয়েট করে সেটার ব্যাপারে গণমাধ্যমকেও খেয়াল রাখতে হবে। দেশের জন্য যেটা উপকারী সেটা দেখতে হবে, করতে হবে। ব্যক্তিগত লাভের থেকে দেশের জন্য যেটা লাভজনক সেটা বেশি দেখতে হবে।’

কোস্টগার্ডের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘কোস্ট গার্ড আমাদের নদীপথ ও সমুদ্রের উপকূলের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব তাদের। তারা এটি খুব ভালোভাবে করে যাচ্ছে। আপনারা জানেন, মিয়ানমার সীমান্তে মাঝে মাঝে সমস্যা হয়। কোস্ট গার্ড সফলতার সঙ্গে সমাধান করছে। বিভিন্ন সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা আমাদের সীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যায় ৷ এসব ক্ষেত্রেও কোস্ট গার্ড ভালো ভূমিকা রাখছে।’

উপকূল এলাকায় মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি প্রবেশ করছে। এই সব এলাকায় আপনাদের নজরদারি কতটা আছে? এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমাদের সঙ্গে মিয়ানমারের যে অঞ্চল আছে ওই এলাকায় বর্তমানে মিয়ানমার সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এ জন্য কোস্ট গার্ড ও বিজিবির কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু তারা সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে তাই আমাদের উপকূল এলাকা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। এখানে কোনো ধরনের সমস্যা নেই।’

সীমান্তে ও টেকনাফে রোহিঙ্গা সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়া হয়েছে। এর কারণে রোহিঙ্গারা সহজে পাসপোর্ট পেয়ে যাবে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন উঠিয়ে দেওয়া আমাদের অনেক দিনের চেষ্টা ছিল। রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পাওয়া সহজ হবে না, কারণ ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া পাসপোর্ট করা যায় না। তাই রোহিঙ্গারা যেন জাতীয় পরিচয়পত্র না পায় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করব। যারা পেয়েছে তাদের যাচাই-বাছাই করা হবে। তবে কী পরিমাণ আছে সেটা বলা যাচ্ছে না।’

আরাকান আর্মিরা সীমান্ত এলাকায় প্রবেশ করে বাংলাদেশি জেলেদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত এলাকা ঢুকে কাউকে নেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আপনারা জানেন আমাদের জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে সীমানা অতিক্রম করে মিয়ানমারের জল সীমায় প্রবেশ করে ফেললে তখন এই ঘটনা ঘটে।’

এ সময় দুর্নীতি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘দুর্নীতি আমাদের সব জায়গায় গ্রাস করে নিয়েছে। এই দুনীতি যদি কমানো যায় তাহলে সব সেক্টরে উন্নতি হবে। আমাদের বড় সমস্যা এটা। যদি আমরা দুনীতি করি আপনারা সেটা প্রকাশ করে দেন।’

দুর্নীতি এই সরকারের ৬ মাসে কমেছে না বেড়েছে, এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, ‘গত ৬ মাসে আগের থেকে অনেক দুনীতি কমেছে, তবে সহনীয় পর্যায়ে আসে নাই।’

পুলিশ থেকে সাধারণ মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না এবং পুলিশের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না—এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যত অফিসারকে আইনের আওতায় এনেছি, গত ৫৩ বছরে তা হয়নি। আমরা যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি সেখানে ব্যবস্থা পাচ্ছি। রিপোর্ট হওয়ার পর আমাদের তদন্ত করতে হয়। অনেক সময় সত্যতা পাওয়া যায় আবার অনেক সময় মোটিভেটেড সংবাদও পাওয়া যায়। এ জন্য যেটার সত্যতা পাওয়া যায় সেটাতে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেমন আজকে একটি খবর দেখলাম, এর রে সঙ্গে সঙ্গে ওটার ইনভেস্টিগেশন শুরু করতে বলছি। সত্যতা পাওয়া গেলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

আলোচিত

গৌরীর জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমিরের

সব জনতাই সমস্যা ক্রিয়েট করছে: ‘তৌহিদি জনতা’ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

০১:৪৯:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সব জনতাই সমস্যা তৈরি করছে, তবে সব জনতাকেই সরকার নিয়ন্ত্রণও করছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরে ৩০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা। এ সময় ‘তৌহিদি জনতার মব’ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

অমর একুশে বইমেলা–সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ‘তৌহিদি জনতা’ নামে ‘মব’ তৈরি করা হচ্ছে, এমনকি ফুলের দোকানেও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সব জনতাই বিভিন্ন সমস্যা ক্রিয়েট করতেছে। তবে আমরা সব জনতাকেই নিয়ন্ত্রণ করছি। সব জনতা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আমাদের। কোন ধরনের জনতা কিসের জন্য মব ক্রিয়েট করে সেটার ব্যাপারে গণমাধ্যমকেও খেয়াল রাখতে হবে। দেশের জন্য যেটা উপকারী সেটা দেখতে হবে, করতে হবে। ব্যক্তিগত লাভের থেকে দেশের জন্য যেটা লাভজনক সেটা বেশি দেখতে হবে।’

কোস্টগার্ডের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘কোস্ট গার্ড আমাদের নদীপথ ও সমুদ্রের উপকূলের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব তাদের। তারা এটি খুব ভালোভাবে করে যাচ্ছে। আপনারা জানেন, মিয়ানমার সীমান্তে মাঝে মাঝে সমস্যা হয়। কোস্ট গার্ড সফলতার সঙ্গে সমাধান করছে। বিভিন্ন সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা আমাদের সীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যায় ৷ এসব ক্ষেত্রেও কোস্ট গার্ড ভালো ভূমিকা রাখছে।’

উপকূল এলাকায় মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি প্রবেশ করছে। এই সব এলাকায় আপনাদের নজরদারি কতটা আছে? এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমাদের সঙ্গে মিয়ানমারের যে অঞ্চল আছে ওই এলাকায় বর্তমানে মিয়ানমার সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এ জন্য কোস্ট গার্ড ও বিজিবির কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু তারা সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে তাই আমাদের উপকূল এলাকা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। এখানে কোনো ধরনের সমস্যা নেই।’

সীমান্তে ও টেকনাফে রোহিঙ্গা সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়া হয়েছে। এর কারণে রোহিঙ্গারা সহজে পাসপোর্ট পেয়ে যাবে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন উঠিয়ে দেওয়া আমাদের অনেক দিনের চেষ্টা ছিল। রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পাওয়া সহজ হবে না, কারণ ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া পাসপোর্ট করা যায় না। তাই রোহিঙ্গারা যেন জাতীয় পরিচয়পত্র না পায় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করব। যারা পেয়েছে তাদের যাচাই-বাছাই করা হবে। তবে কী পরিমাণ আছে সেটা বলা যাচ্ছে না।’

আরাকান আর্মিরা সীমান্ত এলাকায় প্রবেশ করে বাংলাদেশি জেলেদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত এলাকা ঢুকে কাউকে নেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আপনারা জানেন আমাদের জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে সীমানা অতিক্রম করে মিয়ানমারের জল সীমায় প্রবেশ করে ফেললে তখন এই ঘটনা ঘটে।’

এ সময় দুর্নীতি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘দুর্নীতি আমাদের সব জায়গায় গ্রাস করে নিয়েছে। এই দুনীতি যদি কমানো যায় তাহলে সব সেক্টরে উন্নতি হবে। আমাদের বড় সমস্যা এটা। যদি আমরা দুনীতি করি আপনারা সেটা প্রকাশ করে দেন।’

দুর্নীতি এই সরকারের ৬ মাসে কমেছে না বেড়েছে, এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, ‘গত ৬ মাসে আগের থেকে অনেক দুনীতি কমেছে, তবে সহনীয় পর্যায়ে আসে নাই।’

পুলিশ থেকে সাধারণ মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না এবং পুলিশের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না—এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যত অফিসারকে আইনের আওতায় এনেছি, গত ৫৩ বছরে তা হয়নি। আমরা যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি সেখানে ব্যবস্থা পাচ্ছি। রিপোর্ট হওয়ার পর আমাদের তদন্ত করতে হয়। অনেক সময় সত্যতা পাওয়া যায় আবার অনেক সময় মোটিভেটেড সংবাদও পাওয়া যায়। এ জন্য যেটার সত্যতা পাওয়া যায় সেটাতে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেমন আজকে একটি খবর দেখলাম, এর রে সঙ্গে সঙ্গে ওটার ইনভেস্টিগেশন শুরু করতে বলছি। সত্যতা পাওয়া গেলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’