বগুড়া বিমানবন্দর প্রকল্প প্রায় ২৫ বছর পর আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। নতুন করে রানওয়ে নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিমানবন্দরটি চালু হলে পার্শ্ববর্তী নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসার প্রধান হাব হবে বগুড়া।
জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বগুড়া বিমানবন্দরের রানওয়ে নির্মাণে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।
দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আশা করছি, যাত্রীর পাশাপাশি বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের উপযোগী করে দ্রুত রানওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’
বগুড়া শহর থেকে সাত কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সদর উপজেলার এরুলিয়া। এখানে ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। পরে ১৯৯৫ সালে সদরের এরুলিয়া ও কাহালু উপজেলার বড়মোহর মৌজায় ছোট রানওয়ে (শর্ট ফিল্ড টেক অব ল্যান্ডিং পোর্ট) নির্মাণে ১০৯ একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। এর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে রানওয়ে, কার্যালয়, কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করে। তবে প্রকল্পের কাজ আর তেমন এগোয়নি। এক পর্যায়ে ২০০৫ সালে বিমানবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হলে সেখানে তারা ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টর্স স্কুল গড়ে তোলে।
সম্প্রতি সরকার বগুড়া বিমানবন্দরে রানওয়ে নির্মাণে প্রায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন দেয়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বিমানবন্দরের রানওয়ে নির্মাণ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে জরুরি দরপত্র আহ্বান করেছেন তারা। রোববারের মধ্যে দরপত্র জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছে বেবিচক।
বগুড়ার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাজধানী থেকে সড়ক ও রেলপথে বগুড়া যাতায়াতে ৮-১০ ঘণ্টা লাগে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে যাত্রার সময় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ভোগান্তি এড়াতে প্রতিদিন বগুড়ার সামর্থ্যবান বিপুলসংখ্যক মানুষ আকাশপথে রাজশাহী ও নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসছেন।
বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের কয়েক নেতা জানান, বগুড়ায় পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর চালুর পাশাপাশি বাণিজ্যিক বিমান চলাচল শুরু হলে এ অঞ্চলের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যাবে।
বেবিচকের সাবেক চেয়ারম্যান গ্রুপ ক্যাপ্টেন এম শওকত উল ইসলাম বলেন, ‘উড়োজাহাজ চলাচলে সবচেয়ে নিরাপদ বগুড়ার আকাশপথ। নব্বই দশকে এখানে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ হাজার ফুট রানওয়ে করা হয়। ছোট আকারের প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন-অবতরণে এটি করা হলেও পরে আর কোনো কাজ এগোয়নি।’ বগুড়া বিমানবন্দর চালু করতে বর্তমান সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি চালু করা গেলে পার্শ্ববর্তী নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসার পরিসর বাড়বে। প্রধান হাব হিসেবে ভূমিকা রাখবে বগুড়া।’