বাড়তি ওজন কমিয়ে নিজেকে ফিট আর আকর্ষণীয় দেখাতে অনেকেই বিভিন্ন স্লিমিং সেন্টারে ছুটছেন আজকাল। অনেক স্লিমিং সেন্টার ভালো ছাড়ও দিচ্ছে। এই সেন্টারগুলো কীভাবে ওজন কমায়, কমানোর পর আবার ওজন বেড়ে যায় কি না, এই পদ্ধতিতে ওজন কমানোর কোনো ক্ষতিকর দিক আছে কি না—এমন অনেক প্রশ্ন আমাদের মনে আসে। চলুন, উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি।
ওজন কমানোর সেন্টারগুলোতে স্থূলতা কমায় না, বরং রিজওনাল ফ্যাট বা শরীরের নির্দিষ্ট অংশ যেমন কোমর, মুখ, চিবুক, পেট, নিতম্ব, ঊরুর অংশ থেকে বাড়তি চর্বি কমায়। আবার অনেকে দ্রুত ওজন কমাতে বা বয়সের কারণে ঝুলে যাওয়া চামড়াকে (স্যাগি স্কিন) টান টান করতে স্লিমিং সেন্টারে যায়।
এখন আসি কীভাবে ওজন কমানো হয়। অনেক পদ্ধতি আছে, যেমন লাইপোসাকশন, লাইপোলেজার, বডি ফার্মিং, আলট্রাসনিক ক্যাভিটেশন, ইলেকট্রিক্যাল মাসল স্টিমুলেশন।
আমাদের শরীরের কিছু চর্বি আছে, যেগুলো শরীরচর্চা ও ডায়েটেও কমতে চায় না। এগুলোকে বলে স্টাবন বা রেজিস্ট্যান্ট ফ্যাট। এই চর্বি কমাতে স্লিমিং সেন্টারের পদ্ধতিগুলো কাজে দেয়। এগুলো বেশির ভাগই একইভাবে কাজ করে। শরীরের যে অংশের চর্বি বা ফ্যাট কমানো প্রয়োজন, সেখানে আগে মার্ক করা হয়।
সেখানে লেজার বা ইনজেকশনের মাধ্যমে তরলজাতীয় পদার্থ দিয়ে চর্বিকে গলিয়ে ফেলা হয়। এরপর সাকশন দিয়ে তরল চর্বি বের করে আনা হয়। ইনজেকশন না দিয়ে হাই ফ্রিকোয়েন্সি আলট্রাসাউন্ড দিয়েও চর্বি গলানো যায়। আবার হিট ব্ল্যাংকেট ব্যবহার করা হয়, যা নির্দিষ্ট জায়গায় অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করে চর্বি কমায়।
ইলেকট্রিক্যাল মাসল স্টিমুলেশনের মাধ্যমে ইলেকট্রিক ইমপালস দিয়ে মাসলের নড়াচড়া বাড়ানো হয়। ফলে ত্বক টান টান হয় এবং উজ্জ্বলতা বাড়ে, সঙ্গে কিছু চর্বিও কমে।
অসুবিধা কী আছে
- এসব পদ্ধতি একটু ব্যয়বহুল। এই পদ্ধতিগুলো শুধু রিজওনাল ফ্যাট বা শরীরের একটা নির্দিষ্ট অংশের চর্বি কমাতে পারে। তাই যাঁদের ওজন বিএমআইয়ের মধ্যে বা স্বাভাবিক ওজন, কিন্তু হয়তো মুখ বা পেটের চর্বি কমাতে চান, তাদের জন্য উপযোগী। অতিরিক্ত ওজন থাকলে এ পদ্ধতি কার্যকর নয়। এটি স্থায়ী সমাধানও নয়।
- এই পদ্ধতিতে চর্বি কমালেও নিয়মিত শরীরচর্চা ও খাবার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নয়তো আবারও আগের অবস্থা চলে আসবে।
- সবচেয়ে বড় কমপ্লিকেশন বা জটিলতা হলো অনেক সময় এ পদ্ধতিতে চর্বির কণা ছুটে গিয়ে হার্ট বা মস্তিষ্কের রক্তনালিতে আটকে যেতে পারে, যা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
কী করতে হবে
ওজন কমানোর সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো নিয়ন্ত্রিত জীবনবিধান। এ জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নিজেকে হাইড্রেটেড রাখা বা পর্যাপ্ত পানি পান করাটাও খুব জরুরি।