নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা
আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৪৫
অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে হাজারো মানুষ ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। ভোর থেকেই নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও সাধারণ মানুষ প্রভাতফেরি করে শহীদ মিনারে আসতে শুরু করেন। শ্রদ্ধার ফুলে ছেয়ে গেছে শহীদ বেদি।
মিরপুর-১ নম্বর সেকশনের বাসিন্দা ওমর সানি ও মুন্নী আক্তার প্রতিবছরের মতো এবারও তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। তাঁদের সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে তাসমিমের সঙ্গে এবার যোগ দিয়েছে তাঁদের ১০ মাস বয়সী সন্তান মুনজেরিন। ওমর সানি বলেন, ‘ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো আমাদের দায়িত্ব। সন্তানদেরও সঙ্গে আনি, যাতে তারা বাংলা ভাষার জন্য শহীদদের আত্মত্যাগ হৃদয়ে ধারণ করে বাংলাকে ভালোবাসতে শেখে।’
২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথকভাবে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তাঁরা কিছুক্ষণ নীরব দাঁড়িয়ে থেকে ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে শত শত মানুষ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
সকাল সাড়ে সাতটায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ হায়দার বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের চেতনা আমাদের সমাজকে বৈষম্যহীন করার অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা চাই, বাংলাদেশে সকল জাতিসত্তার মানুষ তার নিজ ভাষায় কথা বলার এবং শিক্ষাগ্রহণের সমান সুযোগ পাক।’
সরকারি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন তাঁর ১১ বছর বয়সী মেয়ে রাইদাকে নিয়ে শহীদ মিনারে আসেন। তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষা পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ ভাষা। আমাদের সন্তানদের বাংলা ভাষার ঐতিহ্য সম্পর্কে জানানো প্রয়োজন, যাতে তারা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে শিখে।’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সকাল পৌনে আটটায় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানায়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘গণতন্ত্র একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা বিভিন্ন সময়ে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি, কখনো হোঁচট খেয়েছি, কিন্তু থেমে থাকিনি। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার মতোই গণতন্ত্রের পথেও আমাদের সংগ্রাম চলবে।’
একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুরূপভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন চলছে। দিনভর রাজধানীসহ সারাদেশে প্রভাতফেরি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।