কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়া (৪২)। উন্নত জীবনের আশায় ইতালি পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন। দালাল চক্রকে ১৮ লাখ টাকা দিয়েও শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন পূরণ হয়নি তাঁর। লিবিয়ায় আটকা পড়ে গত বুধবার মারা যান তিনি। পরিবারের অভিযোগ, সুমনের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, বরং দালালদের নির্যাতনেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
সুমন মিয়া পেশায় চাল ব্যবসায়ী ছিলেন। তবে ব্যবসায় মন্দাভাব আসায় বিদেশে পাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। চার মাস আগে তিনি দেশ ছাড়েন এবং লিবিয়ায় গিয়ে স্থানীয় দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ভৈরবের সুইটি বেগম নামের এক দালালের মাধ্যমে তাঁর ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। সুইটির স্বামী মোজাম্মেল হক ইতালিতে লোক পাঠানোর কাজ করেন বলে পরিচিত।
সুমনের পরিবারের দাবি, সুইটির চক্রের কাছেই ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়, এছাড়া অন্য দালালদেরও বড় অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়েছে। সর্বমোট ১৮ লাখ টাকা খরচ করেও শেষ পর্যন্ত তিনি ইতালি পৌঁছাতে পারেননি। সুমনের স্ত্রী তানজিনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী জানুয়ারির ২৪ তারিখ ইতালি পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তার আগের দিন সে জানায়, দালালরা তাকে নিয়ে টালবাহানা করছে। এরপর গত বুধবার জানতে পারি, সে মারা গেছে।’
পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সুমনকে হয়রানি ও নির্যাতন করা হয়েছে, যার ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে দালাল সুইটি বেগম দাবি করেছেন, সুমনের মৃত্যু স্বাভাবিক এবং তিনি ইতালি পৌঁছানোর সমস্ত ব্যবস্থা করেছিলেন। এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শবনম শারমিন জানিয়েছেন, ‘সুমন অবৈধ পথে ইতালি যেতে চেয়েছিলেন। বিষয়টি মন্ত্রণালয় জানে কি না, তা যাচাই করছি। প্রয়োজন হলে লিখিতভাবে লাশ ফেরানোর জন্য আবেদন করা হবে।’